যমজ বোনের যমজ নম্বর

যমজ দুই বোনের যমজ নম্বর তাক লাগিয়ে দিয়েছে পরিবার থেকে পাড়া-প্রতিবেশীদের। এবারের মাধ্যমিকের ফল প্রকাশ হতেই যমজ দুই বোন ৫৩৮ করেই নম্বর পেয়েছে। বুধবার দুপুরে মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের পর ইন্টারনেটে যমজ দুই মেয়ের রেজাল্ট দেখে রীতিমতো হতবাক হয়েছেন অভিভাবকেরা। এমনকি অবাক হয়েছেন পাড়া-প্রতিবেশীরাও। কিভাবে এটা সম্ভব হল, ভেবে কুল কিনারা করতে পারছেন না ওই দুই যমজ বোনের অভিভাবক থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
যদিও মাধ্যমিকে কৃতি ওই দুই যমজ বোনের সাফ কথা, এটা আমাদের মনের মিল। পৃথকভাবে পরীক্ষা কেন্দ্রে বসলেও, মাধ্যমিকের ফলাফলে কোন অমিল হয়নি। একে অপরের প্রতি মনের যে টান রয়েছে তা প্রমাণ করে দিয়েছে।
মালদা শহরের সিঙ্গাতলা এলাকার বাসিন্দা প্রণব ঘোষ দস্তিদার, পেশায় সরকারি কর্মী। বর্তমানে তিনি মালদা মহিলা বিদ্যালয়ের হেড ক্লার্ক পদে কর্মরত। তাঁর দুই যমজ মেয়ে প্রাপ্তি ঘোষ দস্তিদার এবং প্রীচি ঘোষ দস্তিদার মালদা শহরের মালদা গার্লস হাই স্কুলের ছাত্রী। এবছর তাদের মাধ্যমিকের সিট পড়েছিল মালদা শহরের বাঁশবাড়ি এলাকার কৃষ্ণমোহন বালিকা বিদ্যালয়ে। তারা দুইজন পৃথক দুটি ঘরে বসেই পরীক্ষা দিয়েছেন। কিন্তু পরীক্ষার দু’জনেরই ফলে সেই ৫৩৮ নম্বর মেলায় সকলকে অবাক করে দিয়েছে।
প্রাপ্তি ঘোষ দস্তিদার বাংলায় পেয়েছে ৭৬, ইংরেজিতে ৬১, অঙ্কে ৮১, ভৌতবিজ্ঞানে ৬৫, জীবন বিজ্ঞানে ৯০, ইতিহাসে ৮৩ এবং ভূগোলে ৮২। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৫৩৮।
অন্যদিকে যমজ আরেক বোন প্রাচী ঘোষ দস্তিদার বাংলায় পেয়েছে ৮২, ইংরেজিতে ৬৮, অঙ্কে ৮৩, ভৌত বিজ্ঞানে ৭২, জীবন বিজ্ঞানে ৮০, ইতিহাসে ৬৬ এবং ভূগোলে ৮৭। তাঁরও মোট প্রাপ্ত নম্বর ৫৩৮।
দুই যমজ বোনের বিভিন্ন বিষয়ের আলাদা আলাদা নম্বর থাকলেও সর্বমোট নম্বর ৫৩৮। দু’জনের মাধ্যমিকের এই ফল দেখে অবাক হয়ে গিয়েছেন পাড়া-প্রতিবেশী থেকে পরিবারের লোকেরা।
দুই যমজ বোন প্রাপ্তি ও প্রাচী ঘোষ দস্তিদার জানিয়েছে, ‘মাধ্যমিক পরীক্ষায় আমাদের কৃষ্ণমোহন বালিকা বিদ্যালয়ে সিট পড়েছিল। একজন দোতলার ঘরে এবং আরেকজন ১তলার আলাদা ঘরে বসেই পরীক্ষা দিয়েছি। কিন্তু অদ্ভুত ভাবে আমাদের বিভিন্ন বিষয়ে আলাদা নম্বর হলেও মোট প্রাপ্ত নম্বর একই এসেছে। ভবিষ্যতে ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছা রয়েছে।’
এদিকে দুই যমজ মেয়ের বাবা প্রণব ঘোষ দস্তিদার বলেন, ‘দুই মেয়ের রেজাল্ট দেখে আমি অবাক হয়ে গিয়েছি। ভালো নম্বর পেয়ে ওরা পাশ করেছে ঠিকই। কিন্তু মোট নম্বর একদম সমান সমান, এটাই আমার কাছে বড় পাওনা। ওরা চির জীবন যেন এভাবেই মিলেমিশে থাকে।’
এদিকে দুই যমজ মেয়ের যমজ নম্বর পাওয়াতে বেজায় খুশি মা অর্চিতা ঘোষ দস্তিদার। তিনি বলেন, ‘সাফল্যের সঙ্গে আমার দুই মেয়ে পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে। তার ওপর যমজ নম্বর এটা আরও অবাক করে দেওয়ার মতো। যমজ দুই মেয়ের যমজ নম্বর নিয়ে আমরাও হতবাক হয়ে গেছি।’
মালদা গার্লস হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সুতপা চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, প্রাপ্তি এবং প্রাচী ঘোষ দস্তিদার ওরা দুই যমজ বোন। মাধ্যমিকে ওরা দু’জনেই ৫৩৮ করে পেয়েছে। সত্যি বিষয়টি অবাক করে দেওয়ার মতোই। তবে ভাল ফল করেছে। আশীর্বাদ করি ভবিষ্যতেও যেন ওরা এভাবেই শিক্ষাক্ষেত্রে সাফল্য পায়।